এবিএনএ : বকেয়া মজুরি পরিশোধ, পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দসহ পাঁচ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের সরকারি সাত জুট মিলের শ্রমিকদের ৬ষ্ঠ দিনের ধর্মঘট চলছে।
রোববার সকাল ১০টায় খুলনা মহানগরীর খালিশপুর ও আটরা শিল্পাঞ্চলে খোড়া মিছিল করেছে জুটমিল শ্রমিকরা। মিছিলে শ্রমিকদের হাতে থালা-বাসন ও পরনে ছেঁড়া গেঞ্জি, শার্ট, পাঞ্জাবি ছিল।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের ডাকে গত ৪ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে শ্রমিকরা। শুক্রবার একদিন সাপ্তাহিক ছুটির পর শনিবার থেকে ফের ধর্মঘটে নামে শ্রমিকরা।
পাঁচ দফার মধ্যে রয়েছে- পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি প্রদান, মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, মহার্ঘ ভাতা প্রদান, আলীম জুট মিল ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া বাতিল।
চলমান আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে- খুলনার খালিশপুরের প্লাটিনাম ও ক্রিসেন্ট জুট মিল, দিঘলিয়ার স্টার জুট মিল, আটরা শিল্প এলাকার ইস্টার্ন ও আলিম জুট মিল এবং যশোর নওয়াপাড়া রাজঘাট এলাকার যশোর জুট মিল লিমিটেড (জেজে আই) ও কার্পেটিং জুট মিল।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন বাংলামেইলকে জানান, শ্রমিকদের বিষয়ে কেউ চিন্তা করে না। শ্রমিকরা আজ অবহেলিত। দীর্ঘদিন ধরে মজুরি না পেয়ে শ্রমিকদের পেটে ভাত নেই। ছেলে মেয়েদের মুখে খাবার তুলে দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। সামনে নতুন বছর। পহেলা বৈশাখে সরকারি চাকরিজীবীদের বৈশাখী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তারা ইলিশ মাছ কিনে খাবে। অথচ শ্রমিকরা সরকারি জুট মিলে কাজ করে আজ দাবি আদায়ে খালি পেটে আন্দোলন করছে। তারই অংশ হিসেবে থানা-বাসন নিয়ে খোড়া মিছিল করা হয়।
ওই পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘৪ এপ্রিল থেকে লাগাতার ধর্মঘট পালন করে আসছি। সেই সাথে তিনদিন রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। জেলা প্রশাসকের অনুরোধে তিন দিনের জন্য অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের বিষয়ে কোনো সঠিক সমাধান আসেনি।’
তবে আজ রোববারের মধ্যে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সুষ্ঠু কোনো সমাধান না আসলে সোমবার থেকে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা করে কঠোরভাবে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে মিলগুলো অচল হয়ে পড়েছে। মিলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় বড় ধরনের লোকসানে পড়ার শঙ্কা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।